বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮

অতলান্তিকের নাগরদোলায়

তিনজন ডুবুরি ক্রমানুপাতিক
ডুবছেন-ভাসছেন, যেন মাছের সন্ধানে পানকৌড়ি।
সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে। নদীর ¯্রােত
এইখানটায় ঘূর্নিবায়ুর মতো, চামচের আঘাতে শরবত
যেমন ঘোরে চক্রাকারে, কাচের গ্ল¬াসে।

সাঁতার না জানা ছেলে, সাথীদের সাথে খেলতে এসে
হয়তো তলিয়ে গেছে ¯্রােতের অতলে। হয়তো জলপরী
মাছেদের রাজকন্যা, মৎস্যকুমারী তাকে নিয়েছে টেনে
অচেনা জগতে পাতালপুরীর।
তিনজন ডুবুরি, যেন পানকৌড়ি; অপেক্ষমান
তীরের সমগ্র মানুষ। নদী তুমি এতো নিষ্ঠুর কেন!

ছেলেটা ঘোরাতো লাটিম। ইশকুলে তার
খ্যাতি ছিলো লাটিমবাজ বলে, আর ছিল
শিশুপার্কে নাগরদোলায় চড়ার ভিষণ রকম শখ।
তিনজন ডুবুরি অতলান্তিক ¯্রােতে
পেলো তার সাক্ষাৎ।
যেন সে জলের নাগরদোলায় দুলছে, যেন সেÑ
জলকুমারীর লাটিম, সূর্যের পাশে ঘূর্ণায়মান পৃথিবী।

নদী তুমি কতো জল ধারণ করো? এই দেখো, ছেলেটার
মায়ের চোখের জলে, বাবার চোখের জলে
পৃথিবীর সমস্ত মানুষ অনায়াসে ডুবে যেতে পারে।

নির্বাচনি ফলাফল

দাদা বাঘ মার্কায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
গ্রামের নির্বাচন, মেম্বারী পদ। পাশ তিনি
করতে পারেননি; তবু নাম রটে গেলো বাঘ।
প্রতাপ বুঝাতে নিজের জমিতে করেছিলেন
একটি বাজার স্থাপন, সে বাজার আজও
বাঘের বাজার নামে খ্যাত।

খাদ্যের চাহিদা মিটে গেলে মানুষ
সুনামের কাঙাল হয়। নাম-সুনাম
জুটে গেলে চায় ক্ষমতা।
আমার বন্ধুর মামা, জীবিকার
অভাব ছিল না, তাই চেয়েছিলেন সুনাম।
পরিচিতি অর্জনের সহজ উপায়
নির্বাচনে দাঁড়ানো।
পরাজয় নিশ্চিত, জনগন চায় না জেনেও
টাকার জোরে নাম লিখালেন
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর তালিকায়। লটারীক্রমে
মার্কা জুটলো গাভী, মানে গাই।

যখন ফেল মারলেন, গ্রামসুদ্ধলোক বলতে লাগলোÑ
গাই ফুতছে...’  নির্বাচনে পরাজিত হওয়া তো
শুয়ে পরারই সমতুল্য।
সেই থেকে তাকে দেখলেই
লোকে বলাবলি করেÑ ‘গাই আইতাছে, গাই।
সুনাম ছড়াতে গিয়ে লোকটার রটে গেল কতো বদনাম...!