বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭

প্রহরীরা প্রহরে প্রহরে

সবুজ ঘাসের বুকে তামাটে তাবু, কাঁটা তারের বেড়া
সীমান্ত এলাকা এটি। ঝরে আছে কিছু
মর্মরে মরা পাতা
পাহাড়ি চাম্বলের, শৈবাল ঢাকা পাথুরে ধূসর ঢিবিতে।

এখানে যাদের গেরস্থালী
পায়ে ওদের চামড়ার ভারী বুট, হাতে দূরবীন, কোমরাবদ্ধে
ধাতব পানির বোতল।
ওরা ডুয়োপিঁপড়ের আদর্শে কর্মঠ। ওরা মৌমাছির মতো
সুশৃংখল দলবদ্ধ, ভিম্রোপোকার মতো হিংস্র আক্রমণাত্মক।
সাথে যে কুকুরটা ওদের
এলসেসিয়ান প্রজাতির, ভীষণ সিয়ানা (দাঁতগুলো
নেক্রের কাছ থেকে ধার করা, খক খক চিৎকার যেন
হিজরা বাঘের হুংকার) তেপান্তরের প্রান্তরে
তার কান রাখে খাড়া
দুবৃত্তের সতর্ক আগমনী শুনবে বলে, নাক রাখে তৎপর
নিতে শত্রুর ঘ্রাণ। আকাশে ওদের
পোষমানা সোনালি ঈগল প্রহরীর দৃষ্টি নিয়ে ঘুরে চক্রাকারে-
প্রহরে প্রহরে দেয়
প্রতিকী সংকেত কর্কশ স্বরে এবং তড়িৎ ছোঁ।

আমার যে ভাই ছ’মাস বয়সী সন্তানের মুখে দুগ্ধ যোগাতে
কাঁটাতার টপকাতে চায়
ওরা তার লাশ ফেলে রাখে ঝোপের আড়ালে
দুমড়ানো কদলীবৃক্ষের মতো। আমার যে বোন বৃদ্ধ বাবার
হাঁপানী রোগের ডাক্তারি খরচ মেটাতে শর্তবদ্ধ পাচারকারীর খপ্পরে
ওরা তার মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে
তারের বেড়ায় জানালা উগলে ছোঁড়া উচ্ছ্বিষ্ট যেমন।
শান্তির সফেদ পায়রা ওড়াতে গিয়ে সন্ধি-সীমান্তে
কখনো-সখনো ওড়ায় ওরা
নখারো শকুন, স্নিগ্ধ পতাকার বদলে রক্তাপ্লুত ওড়নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন